যদি আপনার একটি ব্লগার ওয়েবসাইট থেকে থাকে কিংবা পরবর্তী সময়ে ব্লগার ওয়েবসাইট তৈরী করে আয় করার চিন্তা ভাবনা থাকে তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি শুধুমাত্র আপনার জন্য। ব্লগ থেকে আয় করার জন্য সর্বাধিক ব্যবহৃত এড নেটওয়ার্ক হচ্ছে গুগল এডসেন্স। যদি আপনি নিয়ম না মেনে ব্লগিং করেন তাহলে সহজে এডসেন্স এর দেখা পাবেন না। তাই একটি ব্লগার সাইটে সহজে এডসেন্স পেতে যেসকল নিয়ম অনুসরণ করা প্রয়োজন তা নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা।
ওয়েবসাইট তৈরী করার পেছনে আমাদের অন্যতম একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে তা থেকে ইনকাম করা। আর এই ইনকাম করতে হলে আমাদের ওয়েবসাইটে প্রয়োজন গুগল এডসেন্স যুক্ত করে নেওয়া। গুগল এডসেন্স পেতে হলে আমাদের কিছু নিয়ম মেনে ব্লগিং পরিচালনা করতে হবে, তা না হলে আমরা গুগল এডসেন্স পাবো না। তো কিভাবে ব্লগিং সাইট পরিচালনা করলে এডসেন্স পাওয়া যাবে তার উপায় নিয়ে থাকছে আজকের এই আর্টিকেল। তো চলুন বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ব্লগ সাইট ডিজাইন :
এমন ভাবে আমাদের ব্লগ সাইট তৈরী করতে হবে, যেন তা Responsive হয় অর্থাৎ খুব সহজে যেন ভিজিটররা যেকোন ডিভাইস থেকে ব্লগিং সাইটে ভিজিট করতে পারে। ধরুন আপনি যে আর্টিকেলটি লিখেছেন তা যদি কম্পিউটার থেকে দেখেন তাহলে তা ভালো ভাবে দেখতে পারছেন অপরদিকে দেখা যাচ্ছে যে একই পোস্ট মোবাইল থেকে ভালো ভাবে দেখা যাচ্ছে না, এমনটা যেন না হয় লক্ষ রাখবেন। আর একটি গরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে লোডিং টাইম যেন বেশি না হয়, অর্থাৎ ভিজিটর আপনার সাইটে যেন দ্রুত ভিজিট করতে পারে সে ব্যবস্থা করুন।
টপিক নির্বাচন করা :
ব্লগ সাইট তৈরী করার পর যে বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হলো ব্লগার সাইটে কি বিষয় নিয়ে লিখবেন। কোন ধরণের বিষয় নিয়ে লিখলে অ্যাডসেন্স পাওয়া যাবে। কথা হচ্ছে আপনি যে বিষয় নিয়ে লিখেন না কেন যদি ওয়েবসাইটে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিজিটর আসে তাহলে অবশ্যই অ্যাডসেন্স পাবেন। আমার ব্যক্তিগত মতামত, আপনার যে বিষয়ে সবচেয়ে ভালো জ্ঞান আছে ও স্পষ্ট ধারণা রয়েছে উক্ত বিষয় নিয়ে সর্বদা লিখার চেষ্টা করুন। তবে লিখলে হবে না, এমন ভাবে লিখতে হবে যেন পাঠক প্রথম লাইন পড়ার পর দ্বিতীয় লাইন পড়ার আগ্রহ জন্মায় । মানুূষ যে বিষয় জানতে আগ্রহী, চেষ্টা করবেন সে বিষয় নিয়ে লিখার, তাহলে ব্লগে অধিক পরিমাণে ভিজিটর পাবেন।
কপি-পেষ্ট না করা :
কখনো কারো লেখা সরাসরি কপি পেষ্ট করবেন না। যদি কপি করতেই হয় তাহলে ৭০-৮০% লেখা কেটে ১০-২০% রেখে বাকিটা নিজের মতো করে সাজিয়ে লেখার চেষ্টা করুন। আবারও বলছি কখনো সরাসরি কারো পোস্ট কপি করে ব্যবহার করবেন না। যদি করেন তাহলে আপনার সাইটে আর্টিকেলের সংখ্যা ঠিকই বাড়বে কিন্তু উক্ত কপি করা আর্টিকেল দিয়ে আপনি কখনো অ্যাডসেন্স পাবেন বলে মনে করি না।
ব্লগার সাইটে গুরুত্বপূর্ণ পেজ যুক্ত করা :
অ্যাডসেন্স পেতে হলে অবশ্যই পর্যাপ্ত আর্টিকেলের পাশাপাশি, কিছু গুরুত্বপূর্ণ পেজ থাকতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ পেজের মধ্যে অন্যতম হলো : About, Contact us, Privacy & Policy ইত্যাদি। এসব পেজে সঠিক ভাবে তৈরী করতে হবে।
কাস্টম ডোমেইন ছাড়া অ্যাডসেন্স পাওয়া যাবে কি :
কাস্টম ডোমেইন ছাড়া কি গুগল এডসেন্স পাওয়া যাবে ? হ্যাঁ পাবেন। তবে নিয়মিত আপনাকে আর্টিকেল লিখতে হবে ও প্রচুর অর্গানিক ভিজিটর নিয়ে আসতে হবে।
পোস্ট সংখ্যা কত হলে এডসেন্স পাওয়া যাবে :
কতটি পোষ্ট হলে এডসেন্স পাওয়া যাবে এটি নির্ভর করে আপনার পোষ্ট কোয়ালিটির উপর। কখনো সীমিত সংখ্যক পোস্ট করেও অ্যাডসেন্স পাওয়া সম্ভব আবার কখনো অধিক সংখ্যক পোস্ট করেও সহজে এডসেন্স পাওয়া যায় না। তবে ৩০-৪০+ পোস্ট করার পর যদি ভালো পরিমাণে অর্গানিক ভিজিটর আসে তাহলে এডসেন্স পাওয়ার সুযোগ তৈরী হয়।
সাইট এর বয়স :
গুগল এডসেন্স পাবার জন্য ব্লগ সাইট এর বয়স ২-৩ মাস হওয়ার পর আবেদন করলে সবচেয়ে ভালো হয়। তবে ২-৩ মাসেও যদি ভালো পরিমাণে ভিজিটর না আসে তাহলে আরো পরে আবেদন করুন। মনে রাখবেন, একটি সাইটের প্রাণ হচ্ছে ভিজিটর, ভিজিটর না থাকলে আপনার সাইটের কোনো মূল্য নেই।
গুগল সার্চ কনসোল :
ব্লগার ওয়েব সাইট তৈরী করার পর তা গুগল সার্চ কনসোলে যুক্ত করুন। গুগল সার্চ কনসোলে যুক্ত করার পর ব্লগার সাইটের পোস্টগুলা যখন ইনডেক্স হবে তখন এডসেন্স এর জন্য আবেদন করতে পারেন।
উপরোক্ত বলা নিয়মগুলা অনুসরণ করে ব্লগিং সাইট পরিচালনা করলে আশা করি সহজে আপনি আপনার ব্লগার ওয়েবসাইটে অ্যাডসেন্স পাবার যোগ্যতা অর্জন করতে পারবেন। ব্লগিং নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ যেকোন টিপস ও ট্রিকস জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
0 Comments
Your comment helps to inspire and motivate a blogger to write something better, so please don't forget to give your feedback after reading each post.
Emoji