যে সকল ডিভাইসে ইনপুট ডেটা প্রসেসিং হওয়ার পর আউটপুট প্রদান করে সেই সকল ডিভাইসকে বলা হয় আউটপুট ডিভাইস। কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইসের কাজ হচ্ছে ব্যহারকারীর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী ফলাফল প্রকাশ করা, অর্থাৎ কম্পিউটার ব্যবহারকারী ইনপুট ডিভাইসে যেসকল তথ্য ইনপুট করে তা কম্পিউটার প্রথমে প্রসেসিং করে এরপর আউটপুট ডিভাইসের মাধ্যমে ফলাফল প্রদর্শন করে। আউটপুট ডিভাইসের ভিন্নতার কারণে তা ভিন্ন ভিন্ন আউটপুট প্রদর্শন করে এবং তাদের কাজও ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। নিচে জনপ্রিয় কিছু আউপুট ডিভাইস সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
জনপ্রিয় কিছু আউপুট ডিভাইস :
- মনিটর (Monitor)
- প্রিন্টার (Printer)
- প্রজেক্টর (Projector)
- স্পিকার (Speaker)
- জিপিএস (GPS)
- সাউন্ড কার্ড (Sound Card)
- ভিডিও কার্ড (Video Card)
- ইয়ারফোন (Earphone)
মনিটর (Monitor) :
মনিটর হচ্ছে কম্পিউটারের প্রধান আউটপুট ডিভাইস। কম্পিউটারে যে কোন কাজ করার জন্য মনিটরের প্রয়োজন হয়। মনিটর যে শুধু আউটপুট প্রদর্শন করে তা কিন্তু নয়, ইনপুট দেওয়ার সময়ও বিশেষ কাজে লাগে এটি। সুতরাং মনিটর হচ্ছে কম্পিটারের ডিসপ্লে ইউনিট বা স্কিন। মনিটর আউটপুট প্রদর্শিত করার জন্য এটিকে ভিজুয়াল ডিসপ্লে ইউনিটও বলা হয়। কম্পিউটার ব্যবহারকারীরা মনিটরে একটি ডিজিটাল ইন্টারফেসের মাধ্যমে ডেটা দেখতে পারে। বাজারে বিভিন্ন ধরণের মনিটরের পাওয়া যায। যেমন- LED মনিটর , LCD মনিটর, টাচ স্ক্রিন মনিটর ইত্যাদি।
প্রিন্টার (Printer) :
প্রিন্টার হলো এমন একটি আউটপুট ডিভাইস যেটি Soft copy কে Hard copy তে পরিবর্তন করে। কম্পিউটারের কোন ইনফরমেশন যখন প্রিন্ট করা হয় তখন এটি কাগজ এর মাধ্যমে ছাপিয়ে বের হয়ে আসে। যেকোন তথ্য কম্পিউটারে থাকাকালীন সময়ে এটিকে সফট কপি এবং প্রিন্ট হয়ে বেরিয়ে আসার পর এটিকে হার্ডকপি বলা হয়ে থাকে। হার্ডকপি কে আমরা স্পর্শ করতে পারি কিন্তু সফট কপি স্পর্শ করা যায় না। প্রিন্টারের সাহায্যে কোন তথ্য, কম্পিউটার থেকে আমরা কাগজের মাধ্যমে পেয়ে থাকি। তাই প্রিন্টারও আউটপুট ডিভাইসের একটি বিশেষ উদাহরণ।
প্রজেক্টর (Projector) :
প্রজেক্টরের মাধ্যমে বিশেষ ধরণের চিত্র কিংবা ভিডিও প্রদর্শন করা হয়। তাই এই ডিভাইসটিকেও কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইস বলা হয়। কম্পিউটারে কোন প্রজেক্ট তৈরি করে তা প্রজেক্টরের মাধ্যমে প্রদর্শন করা হয়। তাই প্রজেক্টর হলো এমন একটি আউটপুট হার্ডওয়্যার ডিভাইস যা ইউজারকে বড় স্ক্রীন প্রাচীর বা অন্যান্য বড় পৃষ্ঠে তথ্য, চিত্র কিংবা ভিডিও প্রদর্শন করতে দেয়। অর্থাৎ কম্পিউটারের ছোট মনিটরের পরিবর্তে বিশাল বড় পর্দায় তথ্য, চিত্র বা ভিডিও প্রদর্শন করার জন্য প্রজেক্টর প্রয়োজন হয়। প্রজেক্টর আলো এবং লেন্সকে ম্যাগনিফাইড টেক্সট, ইমেজ এবং ভিডিও প্রদান করতে সক্ষম করে।
স্পিকার :
কম্পিউটারের স্পিকার এমন একটি হার্ডওয়্যার ডিভাইস যা শব্দ তৈরির জন্য কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত থাকে। কম্পিউটারের সাউন্ড কার্ড সিগন্যাল ব্যবহার করে শব্দ তৈরি করে। আর এই স্পিকার হচ্ছে আউটপুট ডিভাইসগুলোর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় একটি ডিভাইস।
জিপিএস (GPS) :
GPS হল একটি স্যাটেলাইট-ভিত্তিক নেভিগেশন সিস্টেম যা একটি নির্দিষ্ট অবস্থান সনাক্ত করতে রেডিও সংকেত ব্যবহার করে। প্রেরক উপগ্রহ এই রেডিও সংকেত এর মাধ্যমে সময়, অবস্থান, গতি ইত্যাদি সম্পর্কিত তথ্য সংগ্রহ করে এবং প্রক্রিয়াকরণের জন্য রিসিভার কম্পিউটারে পাঠায়। কম্পিউটারে এই প্রক্রিয়াকৃত ডেটা বস্তুটির অবস্থান সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য প্রকাশ করতে পারে বলে জি.পি.এস-কে আউটপুট ডিভাইস বলা হয়।
Sound Card (সাউন্ড কার্ড) :
আপনি যখন আপনার ল্যাপটপ বা কম্পিউটারে গান চালান তখন আপনি যে শব্দ শুনতে পান তার জন্য সাউন্ড কার্ড মুখ্য ভূমিকা পালন করে। এটি একটি সম্প্রসারণ কার্ড হিসাবেও পরিচিত, যার অর্থ কেউ তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সাউন্ড কার্ড কনফিগার করতে পারে। সাউন্ড কার্ড কম্পিউটার এবং স্পিকারের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী উপাদান হিসেবে কাজ করে। সাউন্ড কার্ডের অনুপস্থিতিতে, স্পিকার কম্পিউটার ডেটাকে শব্দ শক্তিতে অনুবাদ করতে সক্ষম হবে না। যেহেতু একটি সাউন্ড কার্ড কম্পিউটার প্রসেসর থেকে বাইনারি ডেটা ইনপুট নেয় এবং শব্দ উৎপন্ন করে, তাই এটি সাউন্ড একটি আউটপুট ডিভাইস।
Video Card (ভিডিও কার্ড) :
ভিজ্যুয়াল আউটপুট ডিভাইসের আরেকটি উদাহরণ হল একটি ভিডিও কার্ড। বেশিরভাগ কম্পিউটারে অন্তর্নির্মিত ভিডিও প্রদর্শন ক্ষমতা রয়েছে। কিন্তু, গ্রাফিক্সের গুণমান বাড়ানোর জন্য, এই বাহ্যিক ডিভাইসটি ব্যবহার করা যেতে পারে। ভিডিও কার্ড কম্পিউটারকে স্বচ্ছতার সাথে ব্যবহারকারীর কাছে ভিডিও বা গ্রাফিকাল বার্তা পাঠাতে দেয়। আপনি যদি গেমারদের জিজ্ঞাসা করেন, তারা অবশ্যই একটি ভিডিও কার্ডের গুরুত্ব জানবে।
Earphone (ইয়ারফোন) :
হেডফোন হলো কানের কাছে রাখা একজোড়া ট্রান্সডুসার যা মিডিয়া প্লেয়ার বা রিসিভার থেকে বৈদ্যুতিক তরঙ্গ ধরে এবং শ্রবণযোগ্য শব্দ তরঙ্গে রূপান্তর করে। এটি ইয়ারফোন, স্টেরিওফোন এবং হেডসেট হিসাবেও উল্লেখ করা হয়। হেডফোনগুলি সাধারণত ওয়াকম্যান, সেলুলার টেলিফোন, সিডি গেমার, ভার্চুয়াল অডিও প্লেয়ার এবং ব্যক্তিগত কম্পিউটার সিস্টেমের সাথে ব্যবহার করা হয়। কয়েকটি হেডফোন ইউনিট স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং একটি রেডিও রিসিভার বৈশিষ্ট্যযুক্ত।
0 Comments
Your comment helps to inspire and motivate a blogger to write something better, so please don't forget to give your feedback after reading each post.
Emoji