পাওয়ার ব্যাংক কেনার আগে যে ট্রিকসগুলো জেনে রাখা দরকার

পাওয়ার ব্যাংক – বলা হয়ে থাকে বিপদের বন্ধু। যখন বিদ্যুৎ থাকে না কিংবা এমন কোথাও আমরা যায় যেখানে বিদ্যুৎতের বিন্দুমাত্র স্থান নেই তখন আমাদের হাতে থাকা স্মার্ট ফোনটি চার্জ দেওয়ার জন্য এই পাওয়ার ব্যাংকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমান সময়ে কমবেশি সবাই পাওয়ার ব্যাংক ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু আপনার যদি পাওয়ার ব্যাংক সম্পর্কে কোনো আইডিয়া না থাকে তাহলে কি আপনি একটি ভালো মানের পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পারবেন? অবশ্যই না, তাহলে কিভাবে পাওয়ার ব্যাংক সম্পর্কে জানবেন? তাই আজকে আমি বেশ কয়েকটি টিপস শেয়ার করব, যেগুলো মাথায় রেখে একটি পাওয়ার ব্যাংক কিনলে আশা করি বাজারে গিয়ে পাওয়ার ব্যাংক কিনে আপনি ঠকবেন না এবং ভালো মানের একটি পাওয়ার ব্যাংক কিনতে পারবেন

পাওয়ার ব্যাংক কেনার আগে যে ট্রিকসগুলো জেনে রাখা দরকার

১. ভালো ব্র্যান্ড দেখে পাওয়ার ব্যাংক কেনা :

পাওয়ার ব্যাংক কিনার আগে প্রথমে যে জিনিসটি মাথায় রাখতে হবে সেটি হল ব্র্যান্ড। কেননা একটি ভালো ব্রান্ডের পাওয়ার ব্যাংক না কিনলে আপনাকে নানান ধরনের সমস্যায় পরতে হবে। বাজারে গিয়ে মানুষ যে ভুল করে থাকে সেটি হল দোকানদার যে পাওয়ার ব্যাংকটি দেখাবে সেটিই কিনে ফেলে যা কখনই উচিত নয়। আবার কেউ কেউ পাওয়ার ব্যাংকের উজ্জ্বল রঙ, বিভিন্ন কালারের লাইট দেখে অইসব পাওয়ার ব্যাংক গুলো কিনে ফেলে যা কখনো ভালো হয় না তাই ভালো ব্যান্ড ছাড়া কখোনই পাওয়ার ব্যাংক কিনবেন না। বাজারে বেশ কয়েকটি ব্রান্ডের পাওয়ার ব্যাংক পাওয়া যায়। যেটা আপনার বিশ্বস্ত বলে মনে হয় সেই ব্র্যান্ডের পাওয়ার ব্যাংক কিনে ফেলুন।


২. ক্যাপাসিটি অনুযায়ী পাওয়ার ব্যাংক কেনা :

অনেকে মনে করে যে মোবাইলের ব্যাটারির ধারন ক্ষমতার দ্বিগুন পাওয়ার ব্যাংক নিলে ভালো হয় কারণ তাতে ২ বার ফোন চার্জ দেওয়া যাবে। এই ধারনা নিয়ে অনেকে পাওয়ার ব্যাংক কিনে দেখে যে আসলে ২ বার চার্জ দেওয়া যায় না। আসলে পাওয়ার ব্যাংক এর একটি থাম্ব রুল রয়েছে। সেটা হল পাওয়ার ব্যাংক মুল চার্জের ২/৩ ভাগ চার্জ আউটপুটে সরবরাহ করে। অর্থাৎ ১০,০০০ মিলি এম্পিয়ারের একটি পাওয়ার ব্যাংক ৬,৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ৭,০০০ মিলি এম্পিয়ার চার্জ আউটপুট পাওয়া যাবে। তাই আপনি যত দাম দিয়েই ব্র্যান্ডেড পাওয়ার ব্যাংক কিনুন না কেন আপনি এই পরিমান চার্জই আউটপুট পাবেন । তাই আপনার মোবাইলের ব্যাটারির ধারণ ক্ষমতার উপর নির্ভর করে পাওয়ার ব্যাংক কেনা ভালো

৩. পাওয়ার ব্যাংকের পোর্ট :

পাওয়ার ব্যাংকের পোর্টের বিষয়টি সম্পূর্ণ নিজস্ব পছন্দ। কেননা আপনিই জানেন যে আপনার কয়টি পোর্ট লাগবে। তবে আমি মনে করি আপনার পাওয়ার ব্যাংকটি পারফেক্ট হবে যদি এতে ইউএসবি টাইপ এ অর্থাৎ আউটপুট ২ টি থাকে। এতে করে আপনি একসাথে ২ টি ডিভাইস চার্জ দিতে পারবেন। আর ইনপুটের বিষয়টিও জরুরী। আপনার মোবাইলের চার্জিং পয়েন্ট যদি “মাইক্রো ইউএসবি” হয় তাহলে পাওয়ার ব্যাংকের ইনপুট পয়েন্টটিও “মাইক্রো ইউসবিই” বেছে নিবেন। আর আপনার মোবাইলের চার্জিং পয়েন্ট যদি “ইউএসবি টাইপ সি” হয় তাহলে পাওয়ার ব্যাংকের ইনপুট পয়েন্টটিও “ইউসবি টাইপ সি” বেছে নিবেন।


৪. পাওয়ার ব্যাংকের ব্যাটারী :

সাধারনত পাওয়ার ব্যাংকে ২ ধরনের ব্যাটারী ব্যবহার করা হয়। একটি হল লিথিয়াম আয়ন এবং অন্যটি লিথিয়াম পলিমার। তবে আপনাকে জানতে হবে কোন ব্যাটারীটি ভালো হবে। লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারী লিথিয়াম আয়নের তুলনায় অনেকাংশেই ভালো। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারী গুলো সাধারনত বেশীরভাগ মোবাইলে ব্যবাহার করা হয়। তাই অধিক চার্জে ব্যাটারী গুলো কিছুদিনের মধ্যে ফুলে যায়, ফেটে যায়। তাই পাওয়ার ব্যাংকটি কেনার আগে অবশ্যই দেখে নিবেন।

. পাওয়ার ব্যাংকের আকার :

একটি পাওয়ার ব্যাংকের আয়তন যদি সঠিক না হয় তাহলে এটি বহনে বেশ বেগ পেতে হয়। আপনি যদি একজন এডভেঞ্চার ট্রাভেলার হয়ে থাকেন তবে আপনি একটু বড় সাইজের পাওয়ার ব্যাংক নিতে পারেন। কেননা আপনার সাথে সব সময়ই ব্যাগ থাকে। ব্যাগে পাওয়ার ব্যাংকটি চার্জ দিলেও আপনার ক্ষেত্রে বহনে কোনো সমস্যা হবে না। আর আপনি যদি দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য নিয়ে থাকেন তবে ছোট আকারে নিলে ভালো হয়। এতে বহনেও আপনার সুবিধা হবে।
৬. পাওয়ার ব্যাংকের দাম:
পাওয়ার ব্যাংক একটি ইলেকট্রনিক পণ্য হওয়ায় এর দাম সব সময়ই উঠানামা করবে এটাই স্বাভাবিক। তবে ব্র্যান্ডের পাওয়ার ব্যাংক গুলোর দাম তুলনামুলক ভাবে অন্যান্য পাওয়ার ব্যাংকের তুলনায় বেশী হয়। তবু আমি সবসময়ই সাজেস্ট করব বেশী দাম হলেও ব্র্যান্ডের পাওয়ার ব্যাংক গুলো কিনুন। বাজারে এমন পাওয়ার ব্যাংক দেখবেন যেগুলোর দাম ব্যাটারীর পাওয়ারের তুলনায় অনেক কম। কিন্তু ঐ পাওয়ার ব্যাংক গুলো থেকে ১০০ হাত দূরে থাকবেন। এগুলো মোটেও ভালো হয় না

৭. সুরক্ষা ব্যবস্থা :

যেহেতু পাওয়ার ব্যংক একটি ইলেকট্রনিক ডিভাইস, তাই এর সুরক্ষা ব্যবস্থা আপনাকেই নিশ্চিত করতে হবে। কারন যেকোনো অসতর্কতার কারনে দূর্ঘটনা হতে পারে। নিচের সাবধানতা গুলো অবশ্যই মেনে চলবেন ঃ
  • অধিক সময় ধরে পাওয়ার ব্যাংক চার্জ দেওয়া যাবে না।
  • নির্দিষ্ট ভল্টেজ উপেক্ষা করে চার্জ দেওয়া যাবে না।
  • অত্যাধিক গরম অথবা ঠান্ডা পরিবেশে চার্জ দেওয়া যাবে না।
  • পাওয়ার ব্যাংক দিয়ে মোবাইল চার্জ দেওয়ার সময় মোবাইল ব্যবহার করা যাবে না।

যদি আমাদের সাইটের পোস্টগুলো আপনার একটু হলেও উপকারে আসে তাহলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে ভুলবেন না। আর এই রকম নিত্যনতুন পোস্ট পেতে আমাদের সাথে থাকুন

Post a Comment

0 Comments