যাদের আগে থেকেই একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট আছে তাদের অনেকে ব্যাকলিংক কথাটির সাথে পরিচিত। কিন্তু যারা নতুন ব্লগ সাইট শুরু করেছে বা করবে তাদের কাছে ব্যাকলিংক কথাটির অর্থ একটু কমপ্লেক্স বা কঠিন। SEO বা সাইটের ভিজিটর বাড়ানোর ক্ষেত্রে ব্যাকলিংক খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তো আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো যে ব্যাকলিংক কি, এই ব্যাকলিংক কিভাবে তৈরী করতে হয়।
ব্যাকলিংক কি :
ব্যাকলিংক বলতে যখন কোন ওয়েবসাইটের সাথে আরেকটি ওয়েবসাইটের লিংক কানেক্ট করা হয় তাকে বুঝানো হয়। সহজ ভাবে বলতে গেলে বলা যায় যে, যখন কোনো সাইট আমাদের সাইটের লিংকটি তাদের সাইটে ব্যবহার করার ফলে যে লিংক তৈরি হয় তাই ব্যাকলিংক।
ব্যাকলিংকের গুরুত্ব বা প্রয়োজনীয়তা কি :
আপনার মনে হয়তো একটি প্রশ্ন আসতেই পারে যে আমি ব্যাকলিংক তৈরি কেন করবো বা এর গুরুত্ব কি? তাহলে আপনাকে সবার প্রথমেই বলে রাখি যে কোনো ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটের অফ পেজ এসইও রেঙ্কিংয়ের জন্য ব্যাকলিংক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটের জনপ্রিয়তা, প্রাসঙ্গিকতা এবং আপনার সাইটের ডোমেইন অথরিটি বাড়ানোর ক্ষেত্রেও ব্যাকলিংকের গুরুত্ব থাকে। যখন কোনো সার্চ ইঞ্জিন বট আপনার সাইটটি ক্রল করার জন্য আপনার সাইটের সমস্ত URL বা পেজগুলি পরীক্ষা করবে তখন সে খুব গভীর ভাবে লক্ষ্য করবে যে কত গুলি হাই কোয়ালিটির ব্যাকলিংক আপনার সিটটিকে পয়েন্ট করছে।আপনার সাইটে যত বেশি উচ্চ মানের ব্যাকলিংক থাকবে বা লিংক তৈরি করবেন। আপনার তত বেশি সুযোগ থাকবে গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে রেঙ্ক করার।
অর্থাৎ ব্যাকলিংকের গুরুত্ব হল :
১) আপনার সাইট অর্গানিক ভাবে সার্চ রেঙ্কিং করতে পারবে।কিভাবে ব্যাকলিংক তৈরি করতে হয় :
এখন কথা হচ্ছে কিভাবে এই ব্যাকলিংক তৈরী করতে হয় । আমি আমার নিজের অভিজ্ঞতার আলোকে প্রাপ্ত উপায়সমূহ আপনাদের সাথে শেয়ার করবো যার মাধ্যমে আপনি হাই কোয়ালিটির দীর্ঘস্থায়ী ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারবেন।
১. প্রশ্ন-উত্তর ও ফোরাম সাইট :
Quora ও Reddit - এরকম বেশ কিছু হাই অথরিটি প্রশ্ন উত্তর ও ফোরাম সাইট আছে যেখান থেকে উন্নত মানের ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারবেন। আপনাকে এই সমস্ত সাইটে নিজের প্রোফাইল তৈরি করে সেখানে আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগ সাইটের URL যুক্ত করতে হবে। তার সাথে এই সমস্ত সাইটে বিভিন্ন মানুষের করা প্রশ্ন যা আপনার ওয়েবসাইটের বিষয়ের সাথে সম্পর্কিত সেই প্রশ্নগুলি নির্বাচন করে, সেই প্রশ্নের একটি ভালো মানের উত্তর লিখে সেখানে আপনার সাইটের URL বা রিসোর্স হিসাবে আপনার আর্টিকেল লিংক যুক্ত করুন। আপনার দেওয়া বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর যখন জনপ্রিয়তা পাবে বা অনেকে পড়বে সেখান থেকে আপনার সাইটেও অনেক নতুন ভিসিটর্স আসবে। যখন আপনার এই সমস্ত প্রশ্ন উত্তর বা ফোরাম সাইট থেকে ভিসিটর্স আস্তে থাকবে তখন আপনার ওয়েবসাইটের ব্যাকলিংক তৈরী হয়ে যাবে।
২. গেস্ট পোস্টিং বা গেস্ট ব্লগিং :
হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক পাওয়ার সাথে সাথে নতুন ইউসারদের সাথে যুক্ত হওয়ার জন্য গেস্ট পোস্টিং বা ব্লগিং একটি অসাধারণ মাধ্যম। গেস্ট পোস্টিং বা ব্লগিং হল এরকম কোন ওয়েবসাইট যেখানে আপনি একটি প্রোফাইল তৈরি করে সেই সাইটের গেস্ট হিসাবে আর্টিকেল পাবলিশ করতে পারেন। যখন আপনি গেস্ট পোস্ট লেখেন সেই পোস্টের মধ্যে খুব সহজেই আপনার সাইটের বা সাইটের কোনো পোস্টের লিংক রিসোর্স হিসাবে প্রদান করতে পারেন। এর ফলে যেসব ভিসিটর্স সেই গেস্ট পোস্টটি পড়ে তখন তারা সেখানে আপনার তৈরি লিংক নেভিগেট করে আপনার সাইটেও ভিসিট করবে। গেস্ট ব্লগিং করে আপনি খুব সহজেই হাই কোয়ালিটির লিংক তৈরির মাধ্যমে প্রচুর নতুন ভিসিটর্স আপনার সাইটে নিয়ে আসতে পারবেন।
৩. অন্য ব্লগারদের সাহায্য নিন :
ব্যাকলিংক তৈরি করার জন্য আরো একটি সহজ উপায় হল কোনো হাই অথরিটির ব্লগ সাইটের ব্লগারদের সাহায্য নেওয়া। আপনার ব্লগ টপিক অনুযায়ী অন্য যে ব্লগ সাইটগুলি আছে তাদের জিজ্ঞাসা করতে পারেন আপনার সাইটের লিংক তাদের সাইটে যুক্ত করার জন্য। এছাড়াও যদি কোনো সাইট এর আগে আপনার সাইটের লিংক তার সাইটে ব্যবহার করে থাকে সেই ক্ষেত্রেও তার সাহায্য নিতে পারেন।
৪. ইন্টারনাল লিংক বিল্ডিং :
আমরা আগেই ইন্টারনাল লিংক নিয়ে ওপরে জেনেছি। সেরকমই ব্যাকলিংক তৈরির ক্ষেত্রে ইন্টারনাল লিংকের ভূমিকা অনেক বেশি। আপনি যদি সঠিক ভাবে আপনার কোনো পোস্টের সাথে অন্য পোস্টগুলির লিংক স্ট্রাকচার তৈরী করতে পারেন সেই ক্ষেত্রে অনেক ভালো ব্যাকলিংক তৈরী হবে। একটি পোস্টের মধ্যে অন্যান্য পোস্টগুলির লিংক তৈরি করে ইউসারদের সেখানে প্রেরণ করার মাধ্যমে খুব সহজেই বাকি পোস্টগুলির জন্য বেশি ইউসার পেয়ে যাবেন।
৫. সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্ম :
হাই কোয়ালিটি ব্যাকলিংক তৈরির জন্য সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলি সত্যিই অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমরা সবাই জানি যে ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং টুইটারের মতো সোশ্যাল মিডিয়া সাইট থেকে কত পরিমান ট্রাফিক পেতে পারি। আপনি যদি এই সমস্ত সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোতে পেজ বা প্রোফাইল বানিয়ে সেখানে একটি ভালো সংখ্যার ফলোয়ার তৈরী করতে পারেন। তাহলে সেখানে আপনার বিভিন্ন ব্লগ আর্টিকেল বা তার URL শেয়ার করার মাধ্যমে খুব সহজেই ব্যাকলিংক তৈরি করে নিজের সাইটে ভিসিটর্স নিয়ে আসতে পারবেন।
৬. ইউটিউব ভিডিও :
এরকম বহু ব্লগার আছে যারা ব্যাকলিংক তৈরির জন্য ইউটিউব চ্যানেলের সাহায্য প্রথম থেকে নিয়ে আসছে আর যা এখনো কার্যকর। আপনার যদি একটি ব্লগ সাইট থাকে তাহলে সেই বিষয়ের উপর অবশ্যই একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলুন। আমরা জানি যে একটি ইউটিউব ভিডিওতে কত পরিমান ভিউস আসতে পারে। আপনি যদি একটি ইউটিউবে চ্যানেল শুরু করেন এবং নিজের ব্লগ টপিকের ওপরে বিভিন্ন ভিডিও তৈরী করে আপনার ব্লগ সাইটের লিংক সেই ভিডিওগুলির ডেসক্রিপশন বক্সে ব্যবহার করুন এবং ভিডিওর মাধ্যমে আপনার সাবস্ক্রাইবার বা ভিয়ার্সদের বলুন যে আপনার ব্লগ সাইটটি ভিসিট করতে সেই ক্ষেত্রে, ইউটিউব ভিউস পাওয়ার সাথে সাথে আপনার ব্লগ সাইটের ভিসিটর্স সংখ্যায় বাড়বে এবং আপনার সাইটের ব্যাকলিংকও তৈরি হবে।
৭. ব্লগ কমেন্টিং :
ব্যাকলিংক তৈরির জন্য ব্লগ কমেন্টিং হল জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত সব থেকে সহজ উপায়।আপনার ব্লগ টপিক এর সাথে সম্পর্কিত এরকম কিছু ব্লগ সাইটের কমেন্ট সেকশনে কমেন্টের মাধ্যমে আপনার পোস্ট URL প্রদান করতে হবে। আপনাকে সাধারণত ওই সমস্ত সাইটের ব্লগ পোস্টের কমেন্ট সেকশনে গিয়ে একটি ভালো কমেন্ট লিখে সেখানে আপনার সাইটের URL দিতে হবে। আপনি যদি এরকম বেশকিছু ব্লগ সাইটের কমেন্ট সেকশনে আপনার ব্লগ পোস্টের URL প্রদান করতে পারেন তাহলে অনেক ভালো ব্যাকলিংক তৈরি করতে পারবেন। তবে সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যে সেই সাইটগুলি যাতে জনপ্রিয় ও হাই অথরিটির হয়ে থাকে।
আশা করি বুজতে পারছেন যে ব্যাকলিংক কি, কেন ব্যাকলিংক এতো গুরুত্বপূর্ণ এবং কিভাবে আমাদের ব্লগ সাইটের জন্য ব্যাকলিংক তৈরি করতে হয়। ওয়েবসাইট নিয়ে যেকোন টিপস ও ট্রিকস জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
1 Comments
Backlink somporke onak kiss sikhte parlam.amon helpful post aro cai
ReplyDeleteYour comment helps to inspire and motivate a blogger to write something better, so please don't forget to give your feedback after reading each post.
Emoji