গুগল ক্রোম শুধুমাত্র সার্চ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় না, বরং গুগল ক্রোমের মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন সেবা ফ্রীতে ব্যবহার করতে পারি। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা গুগলের প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু সেবা সমূহ নিয়ে আলোচনা করবো।
Search Engine - সার্চ ইঞ্জিন
গুগলের সেবার কথা বলতে গেলে সর্ব প্রথম যে সেবার কথা বলতে হয় তা হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন। যেকোন তথ্য খোঁজার উপযুক্ত স্থান হচ্ছে গুগল সার্চ ইঞ্জিন। বিশ্বে অনেক সার্চ ইঞ্জিনই আছে কিন্তু অনান্য সার্চ ইঞ্জিনের চেয়ে গুগল সার্চ ইঞ্জিন সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়।
Play Store - প্লে স্টোর
প্লে স্টোর হলো অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহারকারীদের জন্য সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয় অ্যাপস ও গেমস ডাউনলোড করার মাধ্যম, এখানে আপনি আপনার মোবাইলের জন্য প্রয়োজনীয় সকল সফটওয়্যার ডাউনলোড করতে পারবেন। এখানে ফ্রী এবং প্রিমিয়াম দুই ধরনের অ্যাপস;ই পাওয়া যায়, গুগলের সেবা হওয়ায় এখানের সব অ্যাপসগুলোই নিরাপদ।
YouTube - ইউটিউব
ইউটিউব ভিডিও শেয়ারিং করার জন্য জনপ্রিয় একটি প্লাটফর্ম, এটাকে সার্চ ইঞ্জিন হিসেবেও বলা যায় কারণ মানুষ কোন কিছু প্রয়োজন হলে ইউটিউবে গিয়ে সার্চ করে। সংবাদ, বিনোদন, শিক্ষা, রেসিপি, প্রযুক্তিসহ বিভিন্ন টিপস ভিডিও ইউটিউবে পাওয়া যায়।
Google Map - গুগল ম্যাপ
গুগল ম্যাপ হলো গুগলের তৈরি ওয়েব ম্যাপ, যেখানে পথ-ঘাট, দোকান, বাজার, প্রতিষ্ঠান সবকিছুর ম্যাপ দেওয়া আছে। এছাড়াও কোথায় যেতে হলে কিভাবে যাবেন সেই নির্দেশনা গুগল ম্যাপ থেকে নিতে পারবেন। তাছাড়া আপনার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে জানতে হলে গুগল ম্যাপ ব্যবহার করুন। গুগল ম্যাপে আপনার বাসা কিংবা দোকানের ঠিকানা যোগ করতে পারবেন, এতে করে কাষ্টমাররা সহজেই আপনার দোকানের সন্ধান পেয়ে যাবে।
Translate - ট্রান্সলেট
এক ভাষা থেকে অন্য ভাষায় অনুবাদ করার জন্য গুগল ট্রান্সলেটের বেশ সুনাম। প্রায় একশটিরও বেশি ভাষায় অনুবাদ করা যায় গুগল ট্রান্সলেট দিয়ে। আপনি এখানে বিশ্বের প্রায় অধিকাংশ ভাষা’ই অনুবাদ করতে পারবেন।
Google Photos - গুগল ফটোজ
গুগল photos গুগলের এমন একটি সেবা যেখানে আপনি আপনার গ্যালারির ছবিগুলো সংরক্ষণ করতে পারবেন, এজন্য আপনাকে গুগল photos এ জিমেইল দিয়ে লগইন করে নিতে হবে অথবা আপনার মোবাইলে জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এখানে ১৫ জিবি পর্যন্ত ফ্রী স্টোরেজ ব্যবহার করতে পারবেন।
Google Drive - গুগল ড্রাইভ
গুগল ড্রাইভ হলো গুগলের ক্লাউড স্টোরেজ সেবা, এখানে আপনি আপনার মোবাইলে থাকা সব ধরনের ফাইল সংরক্ষণ করতে পারবেন।
Gmail - জিমেইল
জিমেইল হলো গুগলের ই-মেইল সেবা। আজকাল সবারই প্রায় জিমেইল অ্যাকাউন্ট আছে, জিমেইল ছাড়া বর্তমানে অনলাইনে অনেক কিছুই করা যায় না। গুগলের গুরুত্বপূর্ণ সেবা সমূহ যেমন ( প্লে স্টোর, ইউটিউব, গুগল ম্যাপ, ফটোজ, ড্রাইভ, ব্লগার, ট্রান্সলেট ইত্যাদি) সেবা পেতে হলে আপনার অবশ্যই জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। এ ছাড়া অনলাইনে অন্যান্য স্যোশাল অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে চাইলেও জিমেইল অ্যাকাউন্ট প্রয়োজন হয়।
Blogger - ব্লগার
ব্যাক্তিগত ব্লগ কিংবা ওয়েবসাইট তৈরির জন্য ব্লগার বেশ জনপ্রিয়। ব্লগারে আপনি ফ্রীতে ওয়েবসাইটে তৈরি করতে পারবেন। এজন্য আপনাকে কোন ডোমেইন কিংবা হোস্টিং কিনতে হবে না। তবে ব্লগারে যে ডোমেইন পাবেন সেটা সাব ডোমেইন, কিন্তু ব্লগারে হোস্টিং এর জন্য কোন ফি দিতে হয় না। যারা নতুন ব্লগিং শুরু করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য ব্লগার বেস্ট হবে। কিভাবে ব্লগিং করতে হয় তা যদি না জানেন তাহলে আমার লেখা ‘এসো ব্লগিং শিখি’ পিডিএফটি এখনি ফ্রিতে ডাউনলোড করে নিন।
Google Assistant - গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট
গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট হলো আপনার অ্যাসিস্ট্যান্ট, অর্থাৎ আপনি আপনার মোবাইলে গুগল অ্যাসিস্ট্যান্ট চালু করে যে নির্দেশনা দিবেন সেই নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করবে। এজন্য প্রথমে আপনাকে এটি চালু করে নিতে হবে, এরপর আপনি যা বলবেন তাই করবে। এর মাধ্যমে আপনি মিউজিক অন, ফ্ল্যাশ লাইট অন, আবাহাওয়া সংবাদ, গুগল সার্চ ইত্যাদি সেবা সমূহ পাবেন।
Google Forms - গুগল ফর্ম
গুগল ফর্ম হলো জনপ্রিয় অনলাইন ফ্রম মেকিং প্লাটফর্ম, এর মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন কুইজ, আবেদন, রেজিস্ট্রেশন ফর্ম ও জরিপ করতে পারবেন, এটি সম্পূর্ণ ফ্রি, এটি ব্যবহারের জন্য আপনার শুধু একটি গুগল অ্যাকাউন্ট থাকলেই হবে।
Google Docs - ডকস
গুগল ডকস গুগলেরই একটি সেবা, এর মাধ্যমে আপনি মাইক্রোসফট অফিস প্রোগ্রামের মতো কাজ করতে পারবেন, গুগল ডকসে কিছু লিখলে তা সক্রিয় ভাবে গুগলের ক্লাউড স্টোরেজ এ সেভ হয়ে থাকবে। এছাড়া আপনি এখানে মাইক্রোসফট এক্সেল এর মতো হিসাব নিকাশ করতে পারবেন।
Keep note - কিপ নোট
কিপ নোট হলো কোন কিছু লিখে রাখার জন্য নোট, অনেক সময় আমাদের নোট লিখতে হয়, কিন্তু কিপ নোটের সুবিধা হলো আপনি এখানে কিছু লিখলে লেখাটা হারিয়ে যাবে না, জিমেইল লগইন থাকার ফলে, এটি ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়াই ব্যবহার করা যায়।
AdSense - অ্যাডসেন্স
ব্লগার এবং ইউটিউবারদের আয়ের প্রধান উৎস হলো গুগল অ্যাডসেন্স। এমনকি গুগলেরও আয়ের উৎস হলো অ্যাডসেন্স, এই অ্যাডসেন্স বলতে অনলাইন বিজ্ঞাপনকে বুঝায়। মানে আমরা ইউটিউবে ভিডিও দেখার সময় কিংবা কোন ব্লগ পোস্ট পড়ার সময় যে অ্যাডসগুলো দেখি, সেগুলোর জন্য ব্লগার কিংবা ইউটিউবাররা টাকা পায়, আর ঐ টাকা তাদের অ্যাডসেন্স অ্যাকাউন্টে জমা হয়।
AdWords - অ্যাডওয়ার্ড
এডওয়ার্ড হলো পেইড এসইও অর্থাৎ গুগলকে টাকা দিয়ে যদি আপনার ওয়েব পেজকে সার্চ ইঞ্জিনের উপরের দিকে আনতে চান তাহলে আপনাকে আপনাকে গুগল অ্যাডওয়ার্ড অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে। অ্যাডওয়ার্ড নিয়ে তারাই কাজ করে যাদের ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট অথবা ই-কমার্স সাইট আছে।
Google Lens - গুগল লেন্স
আমরা সবসময় গুগলে শব্দ বা বাক্য লিখে সার্চ করি, কিন্তু গুগল লেন্স দিয়ে ছবি দিয়ে সার্চ করা যায়, আপনি এটা দিয়ে আপনার গ্যালারিতে থাকা ছবি অথবা গুগল লেন্স থেকে ক্যামেরা দিয়ে স্ক্যান করার মতো সার্চ করতে পারবেন। এর ফলাফল হিসেবেও ঐ ছবির মতো ছবিই আসবে।
Contact - কন্ট্যাক্ট
আমাদের মোবাইল ডিভাইস বা সিমগুলোতে নাম্বার সেভ করলে পরবর্তী সময়ে তা হারিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে, কিন্তু গুগলের কন্ট্যাক্ট অ্যাপে নাম্বার সেভ করে রাখলে মোবাইল নষ্ট হলে কিংবা হারিয়ে গেলেও নাম্বার হারিয়ে যাবে না।
Find my Device - ফাইন্ড মাই ডিভাইস
অনেক সময় মোবাইল সাইলেন্ট করা থাকে, আপনি যদি সাইলেন্ট অবস্থায় আপনার মোবাইল খুঁজে না পান তাহলে খুব বিরক্ত লাগবে তাই না, কিন্তু যদি ফাইন্ড মাই ডিভাইস অ্যাপ চালু রাখেন তাহলে মোবাইল সাইলেন্ট অবস্থাতেও রিং বাজাতে পারবেন।
এছাড়াও গুগলের আরো অনেক সেবা আছে, যা আপনি খুব সহজে ব্যবহার করতে পারবেন। সকল সেবা একসাথে দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
0 Comments
Your comment helps to inspire and motivate a blogger to write something better, so please don't forget to give your feedback after reading each post.
Emoji