ম্যাসেজিং অ্যাপের জন্য ফেসবুক মেসেঞ্জার অথবা হোয়াটসঅ্যাপ বিখ্যাত হলেও, বর্তমান সময়ে অন্যতম একটি জনপ্রিয় ম্যাসেজিং অ্যাপ হচ্ছে টেলিগ্রাম মেসেঞ্জার। বর্তমান এই সময়ে বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ এই টেলিগ্রাম অ্যাপটি ব্যবহার করছেন। আজকের এই আর্টিকেলে সম্প্রতিকালে ব্যাপক জনপ্রিয় হওয়া টেলিগ্রাম অ্যাপ সম্পর্কে নানান ধরণের বিস্তারিত আলোচনা ও তথ্য দেওয়ার চেষ্টা করব।
টেলিগ্রাম হচ্ছে একটি ম্যাসেজিং অ্যাপ। আর এই অ্যাপের প্রতিষ্ঠাতাগণ হলেন: নিকোলাই দুরোভ ও পাভেল দুরোভ। যারা কিনা হচ্ছে রাশিয়ান দুই ভাই। এটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ২০১৩ সালের মার্চে। টেলিগ্রাম অ্যাপ ব্যবহারকারীরা টেলিগ্রামের মাধ্যমে ছবি, স্টিকার, ভিডিও, অডিও, বার্তাসহ যেকোনো ধরনের নথি পাঠাতে পারে। এই অ্যাপটি ব্যবহার করা অনেক সহজ যা হোয়াটসঅ্যাপ এর মতোই । অবশ্য ব্যবহারের দিক থেকে এটিকে হোয়াটসঅ্যাপ এর চেয়েও বেশি "কার্যকর" এবং "নিরাপদ" বলে মনে করেন কর্তৃপক্ষ।
টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্ট এর ধরন :
টেলিগ্রামে সাধারণ চ্যাট করার পাশাপাশি পেয়ে যাবেন বিভিন্ন চ্যানেল, বট, ইত্যাদি। টেলিগ্রাম চ্যানেল অনেকটা ফেসবুক পেজ এর মতো। এসব চ্যানেলে পোস্ট করা মিডিয়া পাবলিকালি দেখা যায়। আবার অন্যদিকে বট হচ্ছে অটোমেটেড চ্যাট এজেন্ট, যেগুলো নিজ থেকেই মেসেজের রিপ্লাই দিয়ে বিভিন্ন কাজ করতে সক্ষম।
টেলিগ্রামের মুখ্য বৈশিষ্ট্য :
টেলিগ্রাম অ্যাপটির বেশ কিছু প্রধান বৈশিষ্ট্য রয়েছে, সেগুলো হল :
১. এই অ্যাপটি অতি দ্রুত বার্তা দেওয়া-নেওয়া করতে সক্ষম
২. অ্যাপটির ব্যবহার যেমন সহজ তেমনি অনেক নিরাপদ
৩. আপনার বার্তাগুলো আপনার যে কোনো ফোন, কম্পিউটার বা ট্যাবলেটে কোনো ঝামেলা ছাড়াই দ্রুত সিঙ্ক হয়ে যায়।
৪. এখানে বর্ধিত এনক্রিপশন ও গোপনীয়তাসহ ক্রস-প্ল্যাটফর্ম ম্যাসেজিং পরিষেবার প্রদানের ব্যবস্থাও রয়েছে।
৫. এর বার্তার উপর সাধারণত ক্লায়েন্ট-টু-সার্ভার এনক্রিপশন দেওয়া থাকে। তবে, গোপন চ্যাট বার্তাগুলোর গোপনীয়তা বজায় রাখার ক্ষেত্রে জরুরি এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন করা হয়ে থাকে।
৬. এই মেসেজিং অ্যাপটি গ্রুপ চ্যাট ও সেলফ-ডেস্ট্রাকটিং মেসেজগুলোও সমর্থন করে।
৭. আপনার ডিভাইসে এই অ্যাপটি ১০০ MB-এর থেকেও কম জায়গা নেয়। তাই, আপনি আপনার ফোন মেমরি থেকে কিছু ডিলিট না করেই আপনার সমস্ত মিডিয়া এর ক্লাউড স্টোরেজে রেখে দিতে পারেন।
৮. টেলিগ্রামের মাল্টি-ডেটা সেন্টার স্ট্রাকচার ও এনক্রিপশন অনেক দ্রুত ও নিরাপদ।
টেলিগ্রাম অ্যাপের সুবিধা সমূহ :
১. বড় সাইজের যেকোন ফাইল ডাউনলোড করা যায় খুব সজে
২. বড় নথি, ভিডিও আদান প্রদান করা সহজ, সুবিধাজনক।(১.৫ গিগাবাইট পর্যন্ত)
৩. নিরাপদ ভাবে বার্তা প্রদান করা যায়
৪. বার্তা পাঠানোর ৪৮ ঘন্টার মধ্যে তা ডিলেট করা যায় এবং দুদিকেই বার্তা পরিবর্তন ও মোছা সম্ভব।
৫. সংযুক্ত নাম্বার যেকোন সময় পরিবর্তন করা যায় এবং তাতে ব্যবহারকারীর কন্টাক্টরা নতুন নাম্বার স্বয়ংক্রিয়ভাবে পেয়ে যায়।
৬. যেকোনসময় টেলিগ্রাম অ্যাকাউন্টসমূহ মুছে ফেলা যায় এবং ছয় মাসের নিষ্ক্রিয়তায় নিজে থেকেই অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যায়।
৭. তথ্য আদান-প্রদান দ্রুততর।
৮. সিকিউর - টেলিগ্রাম আপনার মেসেজগুলি হ্যাকারদের আক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখে
৯. ওয়ান-অন-ওয়ান ভয়েসকল/ভিডিওকলের সুবিধা
১০. এই অ্যাপটি সম্পূর্ন ফ্রি
১১. সিক্রেট চ্যাট করার সুবিধা
টেলিগ্রাম অ্যাপের অসুবিধা :
বলতে গেলে টেলিগ্রামের তেমন কোন অসুবিধা নাই তবে এই অ্যাপের ডাউনলোডকৃত ফাইল খুঁজে পেতে একটু কষ্ট হয়।
টেলিগ্রাম নিরাপদ কি না !
টেলিগ্রামের নাম শুনলে প্রথমেই অনেকেই প্রশ্ন করেন যে, অ্যাপটি কি আসলে অন্যান্য ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং অ্যাপগুলোর মত নিরাপদ কিনা ? উত্তরটা হলো, নিঃসন্দেহে অন্যান্য যেকোন ইন্সট্যান্ট ম্যাসেজিং অ্যাপ্লিকেশন গুলোর চেয়ে টেলিগ্রাম অনেক অনেক বেশি নিরাপদ। এর পেছনে বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। তবে নিরাপত্তার কথা বলতে গেলে একটি কথা না বললেই নয় যে, ফেসবুক মেসেঞ্জার কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের মতো জনপ্রিয় অ্যাপ গুলোর চেয়ে টেলিগ্রামে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অনেক ভালো এবং বিশ্বস্ত।
0 Comments
Your comment helps to inspire and motivate a blogger to write something better, so please don't forget to give your feedback after reading each post.
Emoji