সময়ের সাথে সাথে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে নিম্নচাপ, পরিণত হতে পারে ঘূর্ণিঝড়ে। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে জানা গেছে চলতি মাসেই (মে) এই ঘূর্ণিঝড় আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিম বাংলা ও বাংলাদেশে। সুন্দরবন অঞ্চলে আঘাত হানতে পারে এই ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এর গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার। কিন্তু এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম রেমাল কেন, আর এর অর্থ কি ? ঘূর্ণিঝড় রেমাল নিয়ে থাকছে আজকের আলোচনা।
ঘূর্ণিঝড় রেমাল নামটি ওমানের দেওয়া। মূলত এটা একটি আরবি শব্দ যার অর্থ ‘বালু’। এই নামে ফিলিস্তিনের গাজা থেকে ১ দশমিক ৭ কিলোমিটার দূরে একটি শহরও রয়েছে। এই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ২৪ মে রাত থেকে বাংলাদেশের উপকূল এলাকায় বৃষ্টি শুরু হতে পারে, বৃষ্টি চলতে পারে ২৬ তারিখ পর্যন্ত, জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা। এপ্রিল ও মে মাস হচ্ছে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টির মাস। এই ধারাবাহিকতায় এবারো এক বা একাধিক ঝড় সৃষ্টি হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। তবে কতটা ভয়াবহ হবে এই ঝড়, তা এখনো স্পষ্ট নয়।
কেন ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয় :
এক সময় ঘূর্ণিঝড়গুলোকে বিভিন্ন নম্বর দিয়ে শনাক্ত করা হতো। কিন্তু সেসব নম্বর সাধারণ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য। ফলে সেগুলোর পূর্বাভাস দেওয়া, মানুষ বা নৌযানগুলোকে সতর্ক করাও কঠিন মনে হতো। এ কারণে ২০০৪ সাল থেকে বঙ্গোপসাগর ও আরব সাগরের উপকূলবর্তী দেশগুলোয় ঝড়ের নামকরণ শুরু হয়।
সাধারণত ঘূর্ণিঝড়ের নামগুলা আলাদা আলাদা পর্যায়ের হয়ে থাকে, পূর্বের কোন ঘূর্ণিঝড়ের নামের সাথে বর্তমান বা ভবিষ্যতে সৃ্ষ্ট হওয়া ঘূর্ণিঝড়ের নামের সাথে মিল থাকবে না। যদি কখনো কোনো অঞ্চলে একসাথে একই সময়ে দু’টি ঘূর্ণিঝড় একসাথে উঠে তখন তাকে সহজেই শনাক্ত করা যায় তার ভিন্ন নামের সাহায্যে। নামকরণ ভবিষ্যতের রেফারেন্সেও সহায়তা করে যখন কোনো অতীত ঘূর্ণিঝড়ের উল্লেখ করা বা আলোচনার প্রয়োজন হয়।
ঘূর্ণিঝড়ে সচেতন হওয়া :
ঘূর্ণিঝড়ের অভিজ্ঞতা বাংলাদেশের জন্য নতুন নয়। অতীতে এ দেশটি এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের অনেকবার শিকার হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগের ওপর মানুষের কোন প্রকার হাত নেই। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপ্রকৃতিও হয়তো আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। তবে প্রয়োজনীয় ও যথাযথ আগাম প্রস্তুতি নিতে পারলে এ ধরনের ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি কমতে পারে। বিশেষ করে উপকূলীয় অঞ্চলে যেসকল মানুষ বসবাস করে, তাদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের বিষয়টি সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সমুদ্রে যেসকল জেলে মাছ ধরতে যান, তাঁদের জন্য সতর্কতা ও নিরাপদে ফিরে আসার জন্য আগাম ঘোষণা, বন্দরসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও সম্পদ রক্ষার যথাযথ উদ্যোগ নিলে জান ও মাল, দুই ক্ষেত্রেই ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব।
এ ছাড়া এ ধরনের ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানার পর চিকিৎসা সেবা বা খাদ্য ও পানীয় জোগান দেওয়া সহ যেসব জরুরি করণীয় থাকে, সে ব্যাপারে আগাম প্রস্তুতি থাকলে সঙ্গে সঙ্গেই উদ্ধার অভিযান ও ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তা করা সম্ভব। দুর্যোগ মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের দক্ষতার সুনাম রয়েছে। আশা করি, এ ক্ষেত্রেও তা বজায় থাকবে।
ঘূর্ণিঝড়ের সতর্ক সংকেত বলতে কী বুঝায় - সতর্ক সংকেত কয়টি ও কি কি ?
যেহেতু ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি কেমন হতে পারে, তা আগে থেকে স্পষ্ট বুঝা যায় না। তাই প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করুন। ঘূর্ণিঝড় নিয়ে পরবর্তী আপডেট জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
0 Comments
Your comment helps to inspire and motivate a blogger to write something better, so please don't forget to give your feedback after reading each post.
Emoji