বাংলাদেশে নাগরিকত্বের প্রথম ও মূল রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি হলো জন্ম সনদ। এই সনদটিকে ভিত্তি করেই একজন নাগরিকের পরবর্তী সময়ে জাতীয় পরিচয়পত্র, পাসপোর্ট, শিক্ষাগত সনদসহ অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি কাগজপত্র প্রস্তুত করা হয়। আধুনিক ডিজিটাল ব্যবস্থার সুবাদে এখন ঘরে বসেই অনলাইনের মাধ্যমে খুব সহজেই জন্ম নিবন্ধনের জন্য আবেদন করা সম্ভব। আপনি যদি অনলাইনে ঘরে বসে নিজের বা পরিবারের কারো জন্ম নিবন্ধন করতে চান, তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই। তো চলুন, অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
ধাপ - ০১ : অনলাইনে নতুন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করার জন্য প্রথমে Birth Registration লিংকে ক্লিক করে জন্ম নিবন্ধনের মূল ওয়েবসাইটে চলে আসুন। সাইটে আসার পর যে ঠিকানায় জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করবেন (জন্মস্থান বা স্থায়ী ঠিকানা) তা সিলেক্ট করে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ - ০২ : এখানে আসার পর জন্ম নিবন্ধন ফরমে আপনার নাম, জন্ম তারিখ, পিতা-মাতার নাম ও প্রয়োজনীয় তথ্য সঠিক ভাবে পূরণ করে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ - ০৩ : এই ধাপে আবেদন করা ব্যক্তির পিতা মাতার প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে হবে। (জন্ম যদি ২০০০ সালের আগে হয় তাহলে তার পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন ডিজিটাল না হলেও চলবে কিন্তু জন্ম যদি ২০০০ এর পর হয় তাহলে অবশ্যই পিতা মাতার ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন নাম্বার থাকতে হবে) জন্ম নিবন্ধন নাম্বার ও প্রয়োজনীয় সকল তথ্য দিয়ে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ - ০৪ : এখন এখান থেকে আবেদন করা ব্যক্তির স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানা সঠিক ভাবে পূরণ করে পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ - ০৫ : এই ধাপে আবেদনাধীন ব্যক্তির সাথে সম্পর্ক চিহ্নিত করে, প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ছবি সংযুক্ত করুন। (অবশ্যই প্রতিটি ছবি ২ মেগাবাইট এর মধ্যে থাকতে হবে)। কাগজপত্র আপলোড করার পর পরবর্তী অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ - ০৬ : এই ধাপে আবেদন করা সকল তথ্য এক নজরে দেখতে পাবেন, যদি কোথাও ভুল হয়ে থাকে তাহলে পূর্ববতী অপশনে ক্লিক করে তা সংশোধন করে নিতে পারবেন। যদি দেখেন সকল তথ্য ঠিকঠাক রয়েছে তাহলে আপনার ইমেইল ও মোবাইল নাম্বার প্রদান করুন। মোবাইল নাম্বার দেওয়ার পর, উক্ত নাম্বারে একটি ওটিপি কোড আসবে। ওটিপি কোডটি কাঙ্খিত স্থানে বসিয়ে সাবমিট অপশনে ক্লিক করুন।
ধাপ - ০৭ : ওটিপি সাবমিট করার পর আপনাকে একটি আবেদনপত্রের নম্বর প্রদান করবে, তা সংরক্ষণ করুন। তার নিচে আবেদনপত্র প্রিন্ট করুন অপশনে ক্লিক করে আবেদনপত্রটি প্রিন্ট করে নিন, যদি নিজের কাছে প্রিন্টার না থাকে তাহলে পিডিএফটি সেইভ করে করে দোকান থেকে প্রিন্ট করে নিন। প্রিন্টকৃত কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আপনার নিকটস্ত ইউনিয়ন পরিষদে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি সহ জমা দিতে হবে।
জমা দেওয়া পর ওরা যদি দেখে আপনার সকল ডকুমেন্ট ঠিকঠাক তাহলে কিছুদিনের মধ্যে আপনি আপনার নতুন জন্ম নিবন্ধনটি হাতে পেয়ে যাবেন। আর যদি ভুলভাল তথ্য দিয়ে জন্ম নিবন্ধন তৈরী করতে চান তাহলে আপনার আবেদনটি ওরা বাতিল করে দিবে। আশা করি বুঝতে পারছেন, এভাবে খুব সহজে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন আবেদন বা তৈরী করে নিতে পারবেন। জন্ম নিবন্ধনের জন্য প্রয়োজনীয় যেকোন তথ্য জানতে আমাদের সাথে থাকুন।
প্রশ্নোত্তর (FAQs)
প্রশ্ন - ১ : আমি কি মোবাইল দিয়েই জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করতে পারব ?
→ হ্যাঁ, আপনি স্মার্টফোন ব্যবহার করে সহজে'ই আবেদন করতে পারবেন। কেবল একটি ব্রাউজার ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকতে হবে।
প্রশ্ন - ২ : আবেদন করার পর কি অনলাইনে'ই জন্ম নিবন্ধন সনদ পেয়ে যাব ?
→ না, অনলাইন আবেদন করার পর নির্ধারিত ইউনিয়ন পরিষদে ফি সহ প্রয়োজনীয় কাগজ জমা দিয়ে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হয়।
প্রশ্ন - ৩ : ওটিপি না এলে কি করবো ?
→ মোবাইল নেটওয়ার্ক ভালো জায়গায় গিয়ে আবার চেষ্টা করুন অথবা অপেক্ষা করে আবার রিকোয়েস্ট করুন। তবুও না এলে নতুন করে মোবাইল নম্বর দিন।
প্রশ্ন - ৪ : আবেদন বাতিল হলে কি আবার আবেদন করতে পারবো ?
→ হ্যাঁ, ভুল সংশোধন করে পুনরায় আবেদন করতে পারবেন।
প্রশ্ন - ৫ : আমি যদি ২০০০ সালের আগে জন্মগ্রহণ করি, তবে কি পিতা-মাতার ডিজিটাল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক ?
→ না, ২০০০ সালের আগে জন্ম হলে পিতা-মাতার ডিজিটাল নিবন্ধন বাধ্যতামূলক নয়।
আপনার যদি আগে থেকে জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করা থাকে, কিন্তু তাতে যদি নাম বা বয়স ভুল থাকে এবং ইংরেজি করা না থাকে তাহলে তা সংশোধন করে নিতে হবে। ঘরে বসে অনলাইনে জন্ম নিবন্ধন সংশোধন করার আবেদন প্রক্রিয়া এখনি জেনে নিন - জন্ম নিবন্ধন সংশোধন বা ডিজিটাল করার নিয়ম।
0 Comments
post a comment